কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ
তরুণ উদ্যোক্তার সাগর হোসেনের (২৬ )বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হুগলা গ্রামে। তিনি ঐ গ্রামে কৃষক বাবু প্রামাণিকের ছেলে। আনুমানিক চার বছর আগে তিনি পড়াশোনার জন্য রাজবাড়ীতে মেসে থাকতেন। সেখানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করে কঠোর অধ্যবসয়ের পরও অনেক শিক্ষার্থী চাকরি না পেয়ে বছরের পর বছর বেকার থাকতে দেখেছেন। শিক্ষিত বেকারদের হতাশার গল্প শুনতে শুনতে উদ্দীর্ণ হয়ে পড়েন। স্বাবলম্বী হতে উদ্যোক্তা হওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে একদিন একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে মাশরুম চাষের উপর প্রতিবেদন দেখেন ও বিভিন্ন বইয়ে উপকারিতা ও বাজারে ব্যাপক চাহিদা সম্পর্কে জানতে পারেন। তারপর তিনি মাশরুম চাষের উদ্বুদ্ধ হন। খুব সহজে মাশরুম চাষে সাফল্য পাননি সাগর হোসেন। এইজন্য তাকে অনেক পরিশ্রম সময় উপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হয়েছে। পরে মাশরুম চাষের জন্য সফল মাশরুম চাষি যুব উন্নয়ন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নেন। এরপর টিউশনি সঞ্চয় ও বাবার কাছ থেকে নেওয়া টাকা ২০২১ সালে মাশরুম চাষ শুরু করেন। পরের বছর সাভার থেকে একজন অভিজ্ঞ মাশরুম চাষীকে ১৪ হাজার টাকা চুক্তি করে তার বাড়িতে এনে বিশ উৎপাদনের কাজ শিখে নিয়ে উৎপাদনের কাজ শুরু করেন। প্রথমে একটু সমস্যা হলেও এক বছরের মাথায় লাভের মুখ দেখেন। ইচ্ছা থাকলে যে কোন প্রতিবন্ধকতা বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় না তার উদাহরণ কুষ্টিয়ার সাগর। শুরু থেকে সাগরে মাশরুম চাষ দেখে অনেকে তাচ্ছিল্য করেছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি মাশরুম চাষ করে এলাকায় বেশ পরিচিত পেয়েছেন সাগর। শ্রুতি কে সেভাবে সুবিধা করতে না পারলে চার বছরের নিজেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি বছরে ৩০ লাখ টাকার মাষ্টার মুভিজ বিক্রি করেছেন। খরচ বাদে বছরে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা আয় করেন। তার মাশরুম সেন্টারের ৩ থেকে ৫ জন যুবক সারা বছর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাকে দেখে অনেকে আগ্রহ হচ্ছে মাশরুম চাষে।
দৃশ্য মৌসুমে তিনি প্রতি মাসে ৪০০ থেকে ৪৫০ কেজি মাসতম উৎপাদন করেন। আর শীতকালে তিনি প্রতি মাসে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার কেজি মাংস উৎপাদন। তার উপায় তো মাস্টার মানসম্মত হওয়া স্থানীয় বাজার ছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম বরিশাল সহ বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে।
দৈনিক আলোকিত নিউজকে সাগর জানান প্রতি কেজি মাসুম উৎপাদন খরচ হয় ৬৫ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি করেছেন ২২০ টাকা কেজি দরে। মাসে এক থেকে দেড় লাখ টাকা ২০ বিক্রি করেন।
তরুণ মাশরুম চাষির রাসেল বলেন সাগরের কাছ থেকে মাশরুমের স্পন সংগ্রহ করে তিনি প্রতিদিন দুই থেকে তিন কেজি উঠাতে সক্ষম হচ্ছে এবং সাগরের মাশরুম বীজগুলো অন্যদের থেকে অনেক ভালো।
খামারের কর্মচারীর তারিকুল ইসলাম তারিক বলেন পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি কাজ করে মাসে ১০ হাজার টাকা আয় করেন। তিনি বাড়িতে মাশরুম চাষ শুরু করেছেন।
যশোর অঞ্চলের টেকসই কিসের সম্প্রসারণ প্রকল্পের তো দারকীয় মূল্যায়ন কর্মকর্তা মোঃ মাসুম আব্দুল্লাহ বলেন, পরিশ্রমী ও অদম্য ইচ্ছা থাকায় ছাত্র জীবনের সাগর সফল মাশরুম চাষী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। স্বল্প পুঁজিতে অধিক মুনাফা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ থাকায় কৃষি বিভাগ মাশরুম চাষ বৃদ্ধি এবং আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ প্রণোদনা ব্যবস্থা করছে।